আয়কর রিটার্নে আপনার জমানো অর্থ কীভাবে উল্লেখ করবেন

Date:

Share post:

প্রতিবছর করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হয়, যেখানে পুরো বছরের আয় ও ব্যয়ের পূর্ণ চিত্র উল্লেখ করতে হয়। সেই সঙ্গে করযোগ্য আয়ের ওপর নির্ধারিত হারে কর পরিশোধ করাও বাধ্যতামূলক। তবে বছরের শেষে অনেকেরই কিছু অর্থ সঞ্চিত থাকে—যা হয় ব্যাংক হিসাবে, নয়তো নগদে। এই সঞ্চিত অর্থ আয়কর রিটার্নে দেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পরবর্তী বছরে আপনার নতুন আয় ও ব্যয়ের হিসাব করতে গেলে আগের বছরের সঞ্চিত টাকাও বিবেচনায় নিতে হবে। তাই ব্যাংক হিসাব ও নগদ—উভয় ক্ষেত্রের অর্থ স্পষ্টভাবে রিটার্নে দেখানো উচিত। মনে রাখতে হবে, ব্যাংকে থাকা টাকা ও হাতে থাকা নগদ এক নয়; তাই হিসাব প্রদর্শনের সময় সতর্ক থাকতে হবে।

ব্যক্তি ও কোম্পানি করদাতাদের আয়কর, ভ্যাট এবং ব্যবসায়িক বিষয়ক পরামর্শ, আয়কর রিটার্ন দাখিল ও প্রশিক্ষণ সেবা প্রদান করে।

Web: taxvatbusiness.tch24.com

Fb: https://www.facebook.com/TVBC20

ব্যাংক হিসাবের টাকা দেখানোর নিয়ম: ব্যাংক হিসাবের স্থিতি দেখানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট তারিখ ধরা হয়—৩০ জুন। ওই তারিখে আপনার ব্যাংক হিসাবে যত টাকা থাকবে, সেটিই রিটার্নে উল্লেখ করতে হবে। যদি একাধিক ব্যাংক হিসাব থাকে, তবে প্রতিটি হিসাবের ৩০ জুনের ব্যালান্স আলাদাভাবে দেখাতে হবে। অনেকে নিজের অ্যাকাউন্টে আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবের টাকা জমা বা উত্তোলন করেন। এতে লেনদেনের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। অনেক সময় এ কারণে অনেকে ব্যাংক হিসাবের তথ্য গোপন করার চেষ্টা করেন—যা ভবিষ্যতে বড় জটিলতা ডেকে আনতে পারে। তাই নিজের ব্যাংক হিসাব শুধু ব্যক্তিগত আয়-ব্যয়ের জন্য ব্যবহার করুন। অন্য কারও টাকা আপনার হিসাবে এলে তার যৌক্তিক ব্যাখ্যা থাকা প্রয়োজন। এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড)–এর নিয়ম অনুযায়ী, পাঁচ লাখ টাকার বেশি যেকোনো লেনদেন অবশ্যই ব্যাংকের মাধ্যমে করতে হবে।

নগদ টাকার হিসাব: অনেকে ভাবেন, আয়কর রিটার্নে বেশি করে নগদ টাকা দেখালে ভবিষ্যতে সুবিধা হবে। এটি ভুল ধারণা। অস্বাভাবিক পরিমাণ নগদ টাকা দেখালে কর কর্মকর্তাদের সন্দেহ হতে পারে এবং আপনার ফাইল অডিটে পড়তে পারে। অনেক করদাতা না বুঝে ২০–৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ দেখিয়ে দেন, কেউ আবার হিসাব না মেলাতে পারায় ইচ্ছাকৃতভাবে নগদ অংশ বাড়িয়ে দেন—যেন নিজের ঘরেই “মিনি ব্যাংক” খুলে রেখেছেন। এটি মোটেও সঠিক পদ্ধতি নয়। বাস্তবভাবে চিন্তা করলে দেখা যায়, আমরা সাধারণত খুব অল্প পরিমাণ নগদ টাকা বাসায় রাখি। তাই ৩০ জুন তারিখে হাতে যে পরিমাণ নগদ অর্থ বাস্তবে ছিল, কেবল সেটিই রিটার্নে দেখানো উচিত।

অতিরিক্ত নগদ দেখানোর পেছনের কারণ: আইনের কিছু ফাঁকফোকরের কারণে অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে নগদ টাকা বেশি দেখান। যেমন—বন্ধুবান্ধব বা সহকর্মীদের সঙ্গে সমবায়ের মতো করে টাকা জমিয়ে রাখার প্রথা রয়েছে, যার কোনো আনুষ্ঠানিক দলিল থাকে না। পরে এই টাকায় কেউ জমি বা সম্পদ কিনলে রিটার্নে তা বিনিয়োগ হিসেবে দেখানো যায়। তখন আয় উৎস হিসেবে যদি “ক্যাশ ইন হ্যান্ড” বা হাতে থাকা নগদ অর্থ দেখানো থাকে, তা ওই বিনিয়োগের বৈধ উৎস হিসেবে গণ্য হয়। ফলে জমি কেনার অর্থ বা সঞ্চয়ের টাকা—উভয়ই বৈধ হিসেবে বিবেচিত হয়।

Related articles

বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম কেন ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের তুলনায় বেশি?

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্বর্ণের দাম ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলো—ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের তুলনায়ও বাংলাদেশে...

সুদানের মুসলিমদের বেঁচে থাকার লড়াই: গৃহযুদ্ধ, ক্ষুধা, আর অনিশ্চয়তার ছায়া

সুদান আফ্রিকার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত একটি প্রধানত মুসলিম দেশ, যেখানে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী।...

২০৩৪ ওয়ার্ল্ড কাপে বিশ্বের প্রথম ‘স্কাই স্টেডিয়াম’ তৈরির ঘোষণা সৌদি আরবের

ফুটবল খেলার প্রতি মানুষের ভালোবাসা পৃথিবীজুড়ে এতটাই গভীর, যে এর সাথে যুক্ত প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি খেলা, আমাদের মনে...

ফ্রিল্যান্সিং: নতুন প্রজন্মের জন্য একটি স্বাধীন উপার্জনের মাধ্যম হিসাবে কাজ করছে The Cloudemy

বর্তমান যুগে ফ্রিল্যান্সিং কেবল একটি কাজের ধরন নয়, বরং এটি নতুন প্রজন্মের জন্য স্বাধীন এবং সৃজনশীল উপার্জনের অন্যতম...