আজ পহেলা বৈশাখ, বাংলা ১৪২৭ সাল
- সারাবাংলা - জাতীয়
- ১৪ এপ্রিল ২০২০ - ৫ বছর আগে
- পড়া হয়েছে - ৩০১৮১
ঢাকা, ১৪ এপ্রিল ২০২০, মঙ্গলবারঃ আজ পহেলা বৈশাখ। চৈত্রসংক্রান্তির মাধ্যমে ১৪২৬ সনকে বিদায় জানিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হল নতুন বছর ১৪২৭। কিন্তু এবার ভিন্ন এক পরিস্থিতিতে এলো অসাম্প্রদায়িক এই উৎসব।
আজ সকালে ভোরের প্রথম আলো রাঙিয়ে দেবে নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। স্বাভাবিক ভাবেই সে স্বপ্ন, করোনা ভাইরাস মুক্ত নতুন বিশ্ব-নতুন বালাদেশ। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বাঙ্গালি করোনা মহামারি থেকে সহসা মুক্তির প্রত্যাশা নিয়েই আজ প্রথমবারের মতো নতুন বছরকে বরণ করে নেবে তেমন কোন আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই। আজ পহেলা বৈশাখে বর্ণিল উৎসবে মাতার কথা দেশ। সকালে ভোরের প্রথম আলো রাঙিয়ে দেয় নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। রাজধানী জুড়ে থাকার কথা মঙ্গল শোপভাযাত্রা নিয়ে বর্ষবরণের নানা আয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশসহ বিশ্বময় এখন চলছে করোনাকাল। মানুষের পৃথিবীতে এখন চলছে অনিশ্চিত সময়। এর আগে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে পহেলা বৈশাখের সমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার।
১৫৫৬ সালে কার্যকর হওয়া বাংলা সন প্রথমদিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে, পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ সমাজের সঙ্গে বাংলাবর্ষের ইতিহাস জড়িয়ে থাকলেও এর সঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাসেরও সংযোগ ঘটেছে। পাকিস্তান শাসনামলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের। আর ষাটের দশকের শেষে তা বিশেষ মাত্রা পায় রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনের মাধ্যমে।
দেশ স্বাধীনের পর বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীকে পরিণত হয় বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। উৎসবের পাশাপাশি স্বৈরাচার-অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে।... ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। যা ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের দুঃখ-বেদনা ভুলে নতুন প্রত্যয়ে সবাইকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ হোক এবারের বাংলা নববর্ষের অঙ্গীকার। বাংলা নববর্ষ ১৪২৭ উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে বলেন, স্বল্প-আয়ের মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করার জন্য ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং ১ লাখ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ করা হয়েছে। যার মোট মূল্য ২ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, "শহরাঞ্চলে বসবাসরত নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য ওএমএস-এর আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রয় কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। আগামী তিন মাসে ৭৪ হাজার মেট্রিক টন চাল এই কার্যক্রমের আওতায় বিতরণ করা হবে। এ জন্য ২৫১ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবি সদস্য এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারীর জন্য ৭৫০ কোটি টাকার বীমার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন, "নতুন বছর মানেই এক নতুন সম্ভাবনা, নতুন আশায় পথ চলা। বুকভরা তেমনি প্রত্যাশা নিয়ে নতুন উদ্যমে ও চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতি কাল আরো সোচ্চার হবে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মৌলবাদ ও জঙ্গি নিধনের দাবিতে।"
মন্তব্য