English
বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪
...

আজ খুলনার চুকনগর গণহত্যা দিবস

জাতীয় স্মৃতিসৌধ, সাভার

ঢাকা, ২০ মে ২০২০, বুধবার: আজ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় খুলনার চুকনগর গণহত্যা দিবস। 

আজকের এই দিনে ১৯৭১ সালের ২০ মে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় চুকনগরে স্বাধীনতা যুদ্ধকালে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী কাপুরোচিত নির্মম এক সামরিক গণহত্যা চালায়। সেই গণহত্যায় নিহতদের অধিকাংশই খুলনা জেলার ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটার অধিবাসী হলেও বাগেরহাট ও পাশ্ববর্তী কয়েকটি জেলার কিছু অধিবাসীও হত্যাযজ্ঞের শিকার হন। চুকনগর বাজার, বাজারের কালী মন্দির, পুটিমারি বিল, ভদ্রা নদীতে ৩-৪ ঘণ্টা যাবৎ প্রায় এক বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে পাকিস্তানি সেনারা নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠে।

স্থানীয়দের বর্ণনা অনুযায়ী আনুমানিক প্রায় দশ হাজার নিরীহ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। জনসাধারণ তখন ৪ হাজারের বেশি গণনা করতে পেরেছিলেন বাকিদের লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। নিহত মানুষদের মধ্যে মাত্র প্রায় ২০০ শত জনের পরিচয় উদ্ধার করা গেলেও বাকিদের নাম, ঠিকানা বা পরিচয় আজ জানা যায়নি। এ এলাকাটি সীমান্তবর্তী এবং ভারতের অতি নিকটে ট্রানজিট পয়েন্ট বিধায় রামপাল, ফকিরহাট, দাকোপ, তেরখাদা, বটিয়াঘাটা,... খরিয়া, কাজিপাশা, ঘ্যাংরাইল, ভদ্রা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলবেঁধে অসহায় মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিতে এখানে এসে জড়ো হয়েছিল।

১৯৭১ সালের মে মাসের মাঝামাঝি সময় ডুমুরিয়া, দাকোপ, রামপাল বটিয়াঘাটা এলাকায় পাকসেনারা ব্যাপকভাবে হামলা চালালে ১৫ মে থেকে অত্র এলাকার হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পার হয়ে ওপারে ভারতে যাবার জন্য যখন এখানে এসে জড়ো হয় ঠিক তখনই এই ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনাটি সংঘটিত হয়।

আর সেদিন ২০শে মে এসব ছিন্নমূল মানুষ আটলিয়া ইউনিয়নের চুকনগর বাজার, রায়পাড়া, মালতিয়া, পুঠিমারি, চাঁদনী, দাসপাড়া, ফুটবল মাঠ, তাতিপাড়া, পাতখোলার বিল, ঘ্যাংরাইল এবং ভদ্রা ও নদীর পাড়ে ভারত যাবার জন্য যানবাহনের অপেক্ষায় করছিল।

সেদিন বেলা ১০ টার দিকে তিনটি ট্রাক ভর্তি প্রায় ৩০ জনের মত পাকসেনাদের দুইটি দল চুকনগর বাজারের উত্তর দিক থেকে শুরু করে নির্বিচারে গুলি করে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে। এই ঐতিহাসিক গণহত্যায় নিহত অগণিত মানুষের স্মৃতি স্মরণ করে পরবর্তীতে চুকনগরে স্থাপন করা হয়েছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ।




মন্তব্য

মন্তব্য করুন