ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে রেকর্ড সংখ্যক ভোটে জয় পেয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’-এর প্রার্থী মো. আবু সাদিক কায়েম। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর শিবির-সমর্থিত কোনো প্রার্থী ডাকসুর শীর্ষ পদে নির্বাচিত হলেন, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
ঘোষিত ফল অনুযায়ী, সাদিক কায়েম পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল-সমর্থিত প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৮৩ ভোট, উমামা ফাতেমা পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট এবং বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের প্রার্থী আব্দুল কাদের পেয়েছেন ১ হাজার ১০৩ ভোট।
তবে ফল ঘোষণার আগেই নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, যার মধ্যে রয়েছেন ছাত্রদল-সমর্থিত আবিদুল ইসলাম খান, স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা এবং আব্দুল কাদের।
নবনির্বাচিত ভিপি সাদিক কায়েম ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি এবং সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। নির্বাচনের সময় তিনি নিজেও অভিযোগ করেছিলেন— প্রশাসন ছাত্রদলকে অনৈতিক সুবিধা দিচ্ছে এবং নির্বাচনে নানা অনিয়ম হয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি কেন্দ্রে স্থাপিত ৮১০টি বুথে। মোট ভোটার ছিলেন ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন— এর মধ্যে ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ জন এবং ছাত্র হলে ২০ হাজার ৯১৫ জন ভোটার।

চলতি ডাকসু নির্বাচনে ২৮টি কেন্দ্রীয় পদের জন্য লড়েছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। পাশাপাশি, ১৮টি হল সংসদের ২৩৪টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী। ভোটারদের প্রতিজনকেই সর্বমোট ৪১টি করে ভোট দিতে হয়েছে।
ডাকসুর এই নির্বাচন দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল ব্যাপক আগ্রহ, তবে নির্বাচনী ফলাফল ঘিরে বিভিন্ন পক্ষ থেকে উত্থাপিত অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।