অনেক দেশে বিয়ের পর নারীরা স্বামীর পদবি গ্রহণ করে থাকেন। তবে এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় ঘটছে ব্যতিক্রম—দেশটির পুরুষেরাও এখন স্ত্রীর পদবি গ্রহণের আইনি সুযোগ পাচ্ছেন।দক্ষিণ আফ্রিকার সাংবিধানিক আদালত সম্প্রতি এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়েছেন, পুরুষদের স্ত্রীর পদবি গ্রহণে বাধা দেওয়া একটি ‘ঔপনিবেশিক যুগের ধারা’ এবং এটি লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের প্রতিফলন। আদালতের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা কোনও সরকারি স্বার্থ রক্ষা করে না; বরং এটি বৈষম্যমূলক। তাই সংশ্লিষ্ট আইন স্থগিত করা হয়েছে।

রায়ে আরও বলা হয়, এই বিধিনিষেধ শুধু নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক ছিল না, এটি আরও গভীরভাবে পিতৃতান্ত্রিক সামাজিক মানসিকতার প্রতিফলন। এতে ধরে নেওয়া হতো, একজন নারীকে স্বামীর পদবিতে পরিচিত হওয়াটাই স্বাভাবিক।এই মামলায় আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন দুটি দম্পতি। একজনে, স্বামীর পক্ষে আবেদন করে বলা হয়, তিনি স্ত্রীর মৃত মা–বাবাকে সম্মান জানাতে তাঁদের পদবি নিতে চান। অন্য একজন নারী নিজের পারিবারিক পদবি রেখে দেওয়ার অনুমতি চান, কারণ তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র সন্তান।এমন আবেদনগুলোর বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা ন্যায়বিচারমন্ত্রী কেউই অবস্থান নেননি। বরং তাঁরাও স্বীকার করেছেন, এই আইন পুরোনো এবং পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে।
এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় কোনো পুরুষকে নিজের পদবি পরিবর্তনের জন্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরে আবেদন করতে হতো, এবং তা যাচাই–বাছাই করে অনুমোদন দেওয়া হতো—স্বয়ংক্রিয়ভাবে নয়। নতুন রায়ের ফলে পার্লামেন্টে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন সংশোধনের পথ তৈরি হলো, যাতে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা যায়।

