নাইজেরিয়ার জনপ্রিয় শেফ হিল্ডা বাচি আবারও রেকর্ড গড়েছেন। শুক্রবার তিনি একটি বিশাল স্টিলের কড়াইয়ে রান্না করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘জোলোফ রাইস’, যা নতুন এক কীর্তি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। রান্নার জন্য ব্যবহার করা হয় ৫ টনের বেশি বাসমতী চাল, ৫০০ কার্টন টমেটো সস, ৭৫০ কেজি রান্নার তেল এবং ৬০০ কেজি পেঁয়াজ। বিশাল আয়তনের কড়াইটি প্রায় ছয় মিটার ব্যাস এবং সমান গভীরতার ছিল। রান্নার পুরো প্রক্রিয়ায় হিল্ডার সঙ্গে ছিলেন ১০ জন সহকারী। অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলেন হাজারো মানুষ, যারা চোখের সামনে এই নজিরবিহীন রান্না প্রত্যক্ষ করেন এবং পরে খাবারটির স্বাদও গ্রহণ করেন।এই রেকর্ড ভাঙার প্রচেষ্টার ছবি ও ভিডিও ইতোমধ্যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। স্বীকৃতির অপেক্ষায় রয়েছেন ২৮ বছর বয়সী এই শেফ, যিনি এর আগেও টানা চার দিন রান্না করে বিশ্বের দীর্ঘতম রান্নার ম্যারাথনের রেকর্ড অর্জন করেছিলেন
জোলোফ রাইস পশ্চিম আফ্রিকার অন্যতম জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী খাবার। সাধারণত এটি মাংস বা মাছের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়, তবে বিভিন্ন দেশে এর প্রস্তুতিতে রয়েছে স্বাতন্ত্র্য। নাইজেরিয়ায় রান্না হয় অতিরিক্ত ঝাল ও মসলাদারভাবে, ঘানায় অপেক্ষাকৃত কম মসলা দিয়ে তৈরি হয়, লাইবেরিয়ায় ব্যবহৃত হয় সি ফুড, আর মালির কিছু অঞ্চলে কলা যোগ করে রান্না করা হয়, যা খাবারটিকে দেয় ভিন্নমাত্রিক স্বাদ।
এই খাবারের ইতিহাসও সমৃদ্ধ। ইতিহাসবিদদের মতে, জোলোফ রাইসের উৎপত্তি ১৪ শতকের উলোফ সাম্রাজ্যে, যা আধুনিক সেনেগাল, মৌরিতানিয়া ও গাম্বিয়ার ভূখণ্ডে বিস্তৃত ছিল। সেখান থেকেই এই রন্ধন ঐতিহ্য পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। আজও এই খাবার নিয়ে দেশগুলোর মধ্যে চলে ‘স্বাদের প্রতিযোগিতা’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায়শই দেখা যায় — কে বানায় সেরা জোলোফ রাইস, তা নিয়ে রসালো বিতর্ক। ২০২১ সালে ইউনেসকো সেনেগালের জোলোফ রাইসকে ‘বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’-র তালিকায় স্থান দেয়, যা এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটির গুরুত্বকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেয়।

