বয়স ত্রিশের কোঠায় পৌঁছালে শরীরের পাশাপাশি মস্তিষ্কেও নানা ধরনের পরিবর্তন দেখা দেয়। এই বয়সের পর থেকেই অনেকের মধ্যে স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মনোযোগে ঘাটতি, বা মানসিক ক্লান্তি বাড়তে শুরু করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু নির্দিষ্ট খাবার ও পানীয় দীর্ঘমেয়াদে মস্তিষ্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে ত্রিশোর্ধ্ব বয়সে।
নিউট্রিশনিস্ট ও নিউরোসায়েন্স গবেষকদের মত অনুযায়ী, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে হলে ত্রিশের পর খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা অত্যন্ত জরুরি।
১. অতিরিক্ত চিনি যুক্ত খাবার ও পানীয়
চিনি বেশি খেলে তা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা দীর্ঘমেয়াদে মস্তিষ্কের কোষে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে সফট ড্রিংকস, ক্যান্ডি, কেক ও মিষ্টিজাতীয় খাবার স্মৃতিশক্তি দুর্বল করতে পারে।
২. প্রক্রিয়াজাত খাবার (Processed Foods)
চিপস, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, ফাস্টফুড কিংবা প্যাকেটজাত খাবারে থাকা ট্রান্স ফ্যাট ও অতিরিক্ত সোডিয়াম মস্তিষ্কের স্নায়বিক কার্যক্রম ব্যাহত করতে পারে।
৩. অ্যালকোহল
অতিরিক্ত মদ্যপান মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেমরি লস ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা হ্রাস করতে পারে।
৪. উচ্চমাত্রার ক্যাফেইন
যথেষ্ট পরিমাণে ক্যাফেইন উদ্দীপনা তৈরি করলেও অতিরিক্ত গ্রহণ ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়, যা মস্তিষ্কের রিফ্রেশমেন্ট প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। এতে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বেড়ে যায়।
৫. কৃত্রিম মিষ্টি (Artificial Sweeteners)
বিভিন্ন ডায়েট পানীয় ও খাবারে ব্যবহৃত কৃত্রিম মিষ্টিজাত উপাদান, যেমন অ্যাসপারটেম, দীর্ঘদিন ব্যবহারে মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
ত্রিশের পর মস্তিষ্ককে সুস্থ ও সচল রাখতে হলে প্রাকৃতিক, পুষ্টিকর খাবারের দিকে ঝুঁকতে হবে। ফলমূল, বাদাম, সবুজ শাকসবজি, ওমেগা-৩ যুক্ত মাছ এবং পর্যাপ্ত পানি গ্রহণের মাধ্যমে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বজায় রাখা সম্ভব।
পুষ্টিবিদরা মনে করেন, “সঠিক খাদ্যাভ্যাস মানেই দীর্ঘমেয়াদি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য। বয়স যত বাড়বে, ততই এর প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যাবে।”