সময় যত এগোচ্ছে, ২০২৬ বিশ্বকাপ ততই ঘনিয়ে আসছে, আর সেই সঙ্গে বাড়ছে আর্জেন্টাইন মহাতারকাকে ঘিরে জল্পনা। ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে শিরোপা জেতানোর পর থেকেই অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, সেটিই ছিল মেসির শেষ বিশ্বকাপ। কিন্তু ফুটবলের এই মহারথী এখনও থামেননি, বরং তিনি যেন নতুন উদ্যমে সামনে এগিয়ে চলেছেন। মেসি নিজেও একাধিকবার বলেছেন, তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নেননি বিশ্বকাপে খেলবেন কি না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি যা বলেছেন, তা ফুটবলভক্তদের আশার আলো দেখিয়েছে। ইন্টার মায়ামির এই তারকা জানিয়েছেন, তিনি চান ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলতে—যদি ফিট থাকতে পারেন। মেসির ভাষায়, “বিশ্বকাপে খেলা সব সময়ই অসাধারণ অভিজ্ঞতা। আমি সেখানে থাকতে চাই। আর যদি খেলি, তাহলে জাতীয় দলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চাই।”

Leading iMedia for Digital Marketing including Facebook, YouTube, Instagram and Google Ads.
Web: dpbsonline.com
তবে মেসি স্বভাবসুলভ সতর্কতাও জানিয়েছেন, তাঁর ফিটনেসই নির্ধারণ করবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, “ইন্টার মায়ামির হয়ে প্রাক-মৌসুমের প্রস্তুতি শুরু হলে প্রতিদিন নিজের শরীরের অবস্থা যাচাই করব। যদি শতভাগ ফিট থাকতে পারি, তাহলে খেলব। এটা তো বিশ্বকাপ—সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা। আগের বার আমরা জিতেছিলাম, আর এবার সেটি ধরে রাখার সুযোগ পাওয়া দারুণ হবে।”
মেসির ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে তাঁর পারফরম্যান্স এখনো ঈর্ষণীয়। ৩৮ বছর বয়সেও তিনি খেলছেন দারুণ ধারাবাহিকতায়। যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) ইন্টার মায়ামির হয়ে তিনি করেছেন ২৮ ম্যাচে ২৯ গোল, যা তাঁকে এনে দিয়েছে মৌসুমের গোল্ডেন বুট। শুধু তাই নয়, ২০২৫ মৌসুমের এমএলএস এমভিপি পুরস্কারেও তিনি ফাইনালিস্ট। যদি এই পুরস্কার জিততে পারেন, তবে তিনিই হবেন প্রথম খেলোয়াড়, যিনি টানা দুই মৌসুমে এমভিপি জিতবেন—এটিই প্রমাণ করে, মেসির মান এখনো কোথাও কমে যায়নি।

এদিকে মেসির বর্তমান মনোযোগ এখন ক্লাব পর্যায়ে। তাঁর লক্ষ্য ইন্টার মায়ামির হয়ে এমএলএস কাপ জয়। ন্যাশভিলের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে প্রথম ম্যাচেই ৩–১ ব্যবধানে জিতে এগিয়ে গেছে মায়ামি। আগামী ২ নভেম্বরের দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পেলে নিশ্চিত হবে তাদের সেমিফাইনাল। এই লড়াইয়ের মাঝেই মেসি জানালেন নিজের পরিকল্পনার কথা—এখনই কিছু চূড়ান্ত নয়, কিন্তু আশা করছেন আগামী বছর নিজের শরীর ও মানসিক প্রস্তুতি যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
সত্যি বলতে, ফুটবলে মেসির মতো খেলোয়াড়দের সিদ্ধান্ত শুধু ব্যক্তিগত নয়—এটা কোটি ভক্তের আবেগের সঙ্গে জড়িত। আর্জেন্টিনার হয়ে আরেকবার বিশ্বকাপে মেসিকে দেখা মানে, যেন এক শেষবারের মতো জাদু দেখা। তিনি ফিট থাকলে, যদি মন চায়, তবে ফুটবল বিশ্ব হয়তো আবারও দেখবে সেই নীল-সাদা ১০ নম্বরের নেতৃত্বে আর্জেন্টিনাকে—আরেকটি বিশ্বকাপের স্বপ্ন নিয়ে।

