ঢাকার সাভারে তুচ্ছ এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সিটি ইউনিভার্সিটির একাধিক বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংঘর্ষে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে দুই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ।
ঘটনাটি ঘটে গত রোববার গভীর রাতে আশুলিয়ার খাগান এলাকায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার দিকে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসা ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেল’-এর পাশে সিটি ইউনিভার্সিটির কয়েকজন শিক্ষার্থী বসে ছিলেন। তাদের একজন অসাবধানতাবশত থুতু ফেললে তা পাশ দিয়ে যাওয়া এক ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীর গায়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।
রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে ওই হোস্টেলে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখান। এরপর শুরু হয় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।
ড্যাফোডিলের প্রক্টরিয়াল টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেয়। তবে এরই মধ্যে সিটি ইউনিভার্সিটির সংলগ্ন এলাকায় এক ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীকে মারধরের খবর পাওয়া যায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে।

বাংলাদেশের শীর্ষ ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং প্ল্যাটফর্ম The Cloudemy.
Web: thecloudemy.com
এ সময় ক্যাম্পাসে থাকা তিনটি বাস ও একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া আরও কয়েকটি গাড়ি ও প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর চালানো হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, “অসাবধানতাবশত সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীর থুতু ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীর গায়ে পড়ে। সামান্য ‘সরি’ বললেই বিষয়টি শেষ হয়ে যেত, কিন্তু পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই আমাদের সন্তান, আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।”
ড্যাফোডিলের প্রক্টর শেখ মুহাম্মদ আলিয়া জানান, “আমাদের প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন এবং এখনো ৯ জনকে সিটি ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে আটকে রাখা হয়েছে।”
অন্যদিকে, সিটি ইউনিভার্সিটির প্রক্টর অধ্যাপক আবু জায়েদ বলেন, “ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনো পরিষ্কার নয়। ছাত্রদের ঝগড়া থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা স্বাভাবিক নয়, এটি পরিকল্পিত মনে হচ্ছে। আমাদের আহতের সংখ্যা আনুমানিক ৫০ জন।”
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার ইউসুফ আলী জানান, দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষার্থী সেখানে ভর্তি হয়েছেন। সবাই সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সাভার মডেল থানার ওসি (অপারেশন) হেলাল উদ্দিন বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি এবং কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।”

