চৈত্রের দাবদাহ ধীরে ধীরে তীব্র হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে, কাজ করার শক্তি কমে যায়, এবং ত্বকেও দেখা দেয় অবসাদ। এই গরমে সুস্থ ও সতেজ থাকতে হলে আমাদের খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। বিশেষ করে পানি ও পানিযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া, পুষ্টিকর খাবার বেছে নেওয়া এবং কিছু খাবার এড়িয়ে চলার মাধ্যমে আমরা সহজেই গরমে সুস্থ থাকতে পারি।
পানিযুক্ত খাবার বেশি খান
গরমে শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়, তাই শরীরকে হাইড্রেট রাখা জরুরি। শুধুমাত্র পানি পান নয়, পানিযুক্ত ফল ও সবজি খেলে শরীর দীর্ঘ সময় সতেজ থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, পানিযুক্ত ফল যেমন তরমুজ, শসা, লিচু, পেঁপে এবং ডাবের পানি পান করলে শরীরের পানির চাহিদা পূরণ হয় এবং ক্লান্তি দূর হয়।
কোন কোন খাবার গরমে শরীর ঠান্ডা রাখবে
- পেঁপে: পেঁপেতে রয়েছে ভিটামিন ই ও এনজাইম যা ত্বকের সতেজতা ধরে রাখে।
- ডালিম: ভারী পরিশ্রমের পর পেশী পুনর্গঠনে সহায়ক।
- শসা: ৯৬% পানি সমৃদ্ধ, যা শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
- ডাবের পানি: প্রাকৃতিক স্যালাইন হিসেবে কাজ করে, শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স বজায় রাখে।
- তরমুজ: ৯২% পানি, প্রাকৃতিক চিনি ও খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ, যা শরীরের পানির ঘাটতি দূর করে।
- আম: কাঁচা আমের শরবত হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- লিচু: গবেষণায় দেখা গেছে, এটি হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি ৫০% পর্যন্ত কমাতে পারে।
মশলাদার খাবার খাওয়ার উপকারিতা
অনেকেই মনে করেন গরমে ঝাল ও মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, কিন্তু গবেষণা বলছে, ঝাল খাবার শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। তবে অতিরিক্ত মশলা এড়িয়ে খাবারে এলাচি ও পুদিনা যোগ করা যেতে পারে, যা শরীরকে ঠান্ডা রাখে।
কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন
- আইসক্রিম ও বরফ ঠান্ডা ড্রিংকস হজমের পর শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
- ফ্রিজের ঠান্ডা পানির বদলে রুম টেম্পারেচারের পানি পান করুন।
- উচ্চ তাপে রান্না করা বা ভাজাপোড়া খাবার কম খান।
- বেশি চর্বিযুক্ত মাংস ও ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন।
- আইসড কফির বদলে হারবাল চা পান করুন।
প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় কিছু নিয়ম মেনে চলুন
- ডায়েটিং বা ব্যস্ততার কারণে খাবার বাদ দেবেন না।
- পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন।
- পেটের অসুখ থেকে দূরে থাকতে হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খান।
- নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন।
- ইতিবাচক চিন্তা বজায় রাখুন ও আত্মবিশ্বাসী থাকুন।
গরমের তীব্রতা থেকে বাঁচতে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় সামান্য পরিবর্তন আনলেই শরীর সতেজ ও সুস্থ রাখা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং এই গরমে সুস্থ থাকুন।