মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালতে মামলা দায়ের করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি। সোমবার (২১ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়টি ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাবিত বিলিয়ন ডলারের তহবিল ছাঁটাই রোধে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাম্প প্রশাসনের কয়েকটি দাবি প্রত্যাখ্যান করার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এসব দাবির মধ্যে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈচিত্র্যবিষয়ক (ডাইভার্সিটি) কার্যক্রম সীমিত করা এবং ইহুদি-বিরোধিতার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ।
হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের আইন মেনে চলে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন ও সাংবিধানিক অধিকারের প্রশ্নে কোনো আপস করবে না।
এর আগে, গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের ২.২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল বরাদ্দ স্থগিত করে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টির করমুক্ত সুবিধা বাতিলের হুমকিও দেওয়া হয়।
হার্ভার্ডের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট অ্যালান এম. গারবার সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কমিউনিটির উদ্দেশে দেওয়া এক খোলা চিঠিতে বলেন, “সরকারের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ ভয়াবহ ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে।” তিনি জানান, তহবিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে শিশু ক্যান্সার, আলঝেইমার এবং পারকিনসন্স রোগ নিয়ে চলমান গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগুলো ব্যাহত হচ্ছে।

হার্ভার্ডের ফেডারেল মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, এই মামলা এমন এক নজিরবিহীন অবস্থার প্রতিচ্ছবি, যেখানে ফেডারেল সরকার অর্থ সহায়তা বন্ধের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, শুধু অর্থনৈতিক চাপ নয়, হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিয়েও ট্রাম্প প্রশাসন সরাসরি চাপ সৃষ্টি করছে।
এদিকে হার্ভার্ডের এই আইনি লড়াইয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন রক্ষা এবং জ্ঞানচর্চার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হার্ভার্ডের পদক্ষেপ সময়োপযোগী।”
এ বিষয়ে হোয়াইট হাউস এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।