ঢাকা, বাংলাদেশ: সন্তান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ আমানত। সন্তান প্রতিপালনে আল্লাহর নির্দেশনা অনুসরণ করা না হলে এটি হবে আমানতের খিয়ানত। শৈশব থেকেই সন্তানদের ঈমান, আকিদা, আমল এবং ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করা মা-বাবার জন্য একটি বড় দায়িত্ব।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, “তোমাদের সম্পদ ও তোমাদের সন্তান-সন্ততি তোমাদের জন্য এক পরীক্ষা। আর মহা পুরস্কার রয়েছে আল্লাহরই কাছে।” (সুরা : আনফাল, আয়াত : ২৮)। এর মাধ্যমে আল্লাহ বান্দাকে পরীক্ষা করেন এবং সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষা ও ঈমানের বিষয়ে যত্নবান হতে নির্দেশ দেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “প্রত্যেক ব্যক্তি দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার অধীনদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।” (বুখারি, হাদিস : ৭১৩৮)। তাই সন্তানদের শৈশব থেকে দ্বিনী শিক্ষায় গড়ে তুলতে মা-বাবার গুরুত্ব অপরিসীম।
এছাড়া, সন্তানদের জন্য দোয়া করা মা-বাবার দায়িত্ব। আল্লাহর কাছে সন্তানদের সঠিক পথের জন্য দোয়া করার কোনো বিকল্প নেই। নবীদেরও তাদের সন্তানদের জন্য দোয়া করার উদাহরণ রয়েছে, যেমন হজরত ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর কাছে পুত্রের জন্য দোয়া করেছেন, “হে আমার প্রতিপালক! আমাকে এমন পুত্র দান করো, যে হবে সেলাকদের একজন।” (সুরা : সাফফাত, আয়াত : ১০০)
শিশুর কানে প্রথমে তাওহিদ, রিসালাত ও আল্লাহর বড়ত্বের বাণী পৌঁছে দেওয়া, শৈশবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ শেখানো, এবং দিন-প্রতিদিনের ছোট ছোট দোয়াগুলো শেখানোও সন্তানকে দ্বিনি পথে চালিত করতে সহায়ক।
পবিত্র কোরআনে লুকমান হাকিমের সন্তানকে দেয়া কিছু উপদেশ আজকের মা-বাবাদের জন্য আদর্শ হতে পারে, যেমন একত্ববাদের শিক্ষা, আল্লাহর আনুগত্যের শিক্ষা, এবং ভদ্রতা ও শালীনতার শিক্ষা।
এছাড়া, নবী করিম (সা.)-এর দেয়া উপদেশগুলো, বিশেষত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-কে দেয়া উপদেশ, সন্তানদের ঈমান ও দ্বিনি বিশ্বাসে পরিচালিত করতে সহায়ক হতে পারে।
একটি আদর্শ ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শৈশব থেকে সন্তানদের ইসলামী শিক্ষায় গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের সন্তানরা যেন সেইসব শিক্ষালয় থেকে ইসলামী শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সে প্রত্যাশা। আল্লাহ তাআলা সকল মা-বাবাকে সন্তানের ধর্মীয় শিক্ষায় আগ্রহী হওয়ার তাওফিক দান করুন।
আমিন।