এ বছরও মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ব্যাপক আনন্দ ও খুশির সঙ্গে উদযাপিত হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসের এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতরের দিন জাতীয় ঈদগাহ ময়দান থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাপক উৎসবের আয়োজন করা হয়।
ইয়াজমানদের ত্যাগ ও সিয়াম সাধনার শেষে ঈদের দিনটি এক অনাবিল আনন্দের দিনে পরিণত হয়। ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে জাতির শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্বরা অংশগ্রহণ করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ কূটনীতিক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। নামাজ শেষে মোনাজাতে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করা হয়।
রাজধানী ঢাকায় ঈদের আনন্দকে আরও বর্ণিল করতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সুলতানি-মুঘল আমলের ঐতিহ্য অনুযায়ী এক শোভাযাত্রার আয়োজন করে। শোভাযাত্রায় ছিল সুসজ্জিত শাহী ঘোড়া, ঘোড়ার গাড়ি এবং বাদ্যযন্ত্র। এ ছাড়া মিছিল শেষে অংশগ্রহণকারীদের সেমাই ও মিষ্টি খাওয়ানোর ব্যবস্থা ছিল, যা ঈদের আনন্দে পরিপূর্ণতা যোগ করেছে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঈদ উদযাপন ছিল সমান রঙিন। রাজশাহীতে হযরত শাহ মখদুম রূপোশ (রহ.) কেন্দ্রীয় ঈদগাহে সকাল ৮টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা হয়। রাজশাহী শহরে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়োজনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে, যাতে শিশু, এতিম ও অন্যান্য সুবিধাবঞ্চিতরা উন্নত খাবার উপভোগ করেছেন।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ ঈদ জামাতকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শহরের মসজিদ ও ঈদগাহগুলোর আশপাশে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, যার ফলে ঈদ জামাত সম্পন্ন হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে।
ঈদ উদযাপন কেবল একটি ধর্মীয় উৎসবই নয়, এটি একটি ঐতিহ্য, যার মাধ্যমে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন আরো দৃঢ় হয়। বাংলাদেশে ঈদুল ফিতরের দিনটি একটি ঐতিহাসিক ও আনন্দময় উপলক্ষ হিসেবে মানুষের মাঝে সুখ-শান্তি, ঐক্য ও সম্প্রতির বার্তা পৌঁছে দেয়।