ঢাকা, ৩ এপ্রিল: পবিত্র রমজান মাস বিদায় নিয়েছে, কিন্তু এর সঙ্গে সঙ্গে যেন অনেকের ইবাদতও থমকে গেছে। মসজিদে মুসল্লিদের সংখ্যা কমে গেছে, কোরআন তিলাওয়াত ও নফল ইবাদতে অনীহা দেখা যাচ্ছে। ধর্মীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রমজান শুধু এক মাসের জন্য নয়, বরং সারা বছরের জন্য একটি প্রশিক্ষণকাল।
রমজান মাসে মানুষের মধ্যে তাকওয়া বা ধর্মভীরুতা বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ বলেন, “আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় করো এবং মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।” (সুরা আল ইমরান: ১০২)। ধর্মীয় ব্যাখ্যায় দেখা যায়, তাকওয়ার তিনটি স্তর রয়েছে— শিরক থেকে বেঁচে থাকা, পাপ থেকে দূরে থাকা এবং সন্দেহজনক কাজও পরিহার করা।
রমজান আমাদের ধৈর্য ও সহানুভূতির শিক্ষা দেয়। কোরআনে বলা হয়েছে, “তারা ধৈর্য ধরে কষ্টে, দুঃখে ও যুদ্ধক্ষেত্রে।” (সুরা বাকারাহ: ১৭৭)। পাশাপাশি, গরিব-অসহায়দের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার গুরুত্বও ইসলামে বারবার বলা হয়েছে।
রমজানের শিক্ষা হলো গুনাহ থেকে বিরত থাকা। নবী (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রোজা রেখেও মিথ্যা কথা ও খারাপ কাজ ছাড়তে পারে না, তার না খেয়ে থাকার কোনো মূল্য নেই।” (বুখারি)। এছাড়া কথাবার্তায় সংযমেরও শিক্ষা দেয় রমজান। কোরআনে বলা হয়েছে, “মানুষ যা কিছু বলে, একজন দৃষ্টিপাতকারী তার কথা সংরক্ষণ করেন।” (সুরা ক্বাফ: ১৮)।
রমজান হলো তাওবার মাস। আল্লাহ বলেন, “হে আমার বান্দারা! তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।” (সুরা জুমার: ৫৩)। ধর্মীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রমজান আমাদের আত্মশুদ্ধির পথ দেখায়, যা সারা বছর অব্যাহত রাখা উচিত।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, রমজানের অন্যতম শিক্ষা হলো দোয়া ও কোরআন তিলাওয়াত। আল্লাহ বলেন, “যখন কোনো বান্দা আমাকে ডাকে, আমি তার ডাক শুনে সাড়া দিই।” (সুরা বাকারাহ: ১৮৬)। তাই রমজানের পরও কোরআন তিলাওয়াত ও ইবাদত চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা।
রমজানের শিক্ষা সারা বছর ধরে রাখতে পারলেই একজন প্রকৃত মুসলমান হিসেবে জীবন পরিচালনা করা সম্ভব হবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।