প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কঠোর বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্রে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন নথিপত্রহীন অভিবাসীদের একটি তালিকা তৈরি করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) এজেন্টরা।
এই অভিযানে বহু বাংলাদেশিও রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছে যে, তালিকাভুক্ত বাংলাদেশিদের পর্যায়ক্রমে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এ পর্যন্ত কতজন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া না গেলেও জানা গেছে যে, বেশ কয়েকজনকে আইস গ্রেপ্তার করে ডিটেনশন সেন্টারে রেখেছে এবং তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বসবাসরত বাংলাদেশিরা বর্তমানে আতঙ্কে রয়েছেন। অনেকেই গ্রেপ্তার এড়াতে নিরবে বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো বাংলাদেশিদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ঢাকায় ইতোমধ্যে দুটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ৫ ও ৬ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার নথিপত্রহীন বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
অনুমান করা হচ্ছে, প্রতি সপ্তাহে ছয় থেকে সাতজন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হতে পারে। ফেরত আসা বাংলাদেশিদের গ্রহণ এবং তাদের সহায়তা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। ঢাকার বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাদের বাড়িতে ফেরার জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হবে।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ যেন প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ করে এবং ফেরত পাঠানো বাংলাদেশিদের সঙ্গে কোনো ধরনের অপমানজনক আচরণ না করা হয়। বিশেষভাবে, তাদের যেন হাতকড়া পরানো না হয়, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিরা এই কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে উদ্বিগ্ন এবং তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈধ অভিবাসনের পথ সুগম করতে উভয় দেশের সরকারকে আরও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।